Press "Enter" to skip to content

হিটলারের মৃত্যুর পূর্বে রোমাঞ্চকর সেই ২৪ ঘন্টা

হিটলার সম্পর্কে শোনেনি এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে। হিটলার যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মহানায়ক ছিলেন, জার্মানির চ্যান্সেলর এবং ৬০ লক্ষ ইহুদীদের নির্বিচারে হত্যা করে ইতিহাসে কালো অধ্যায়ের সৃষ্টিকারী হিটলার! আপনি কি জানেন, হিটলারের মৃত্যুর পূর্বের সেই ২৪ ঘন্টা ছিলো কতোটা রোমাঞ্চকর?

আপনারা হয়তো জানেন, ১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল রাশিয়ার নিকট যুদ্ধে চরম পরাজয়ের শিকার এডলফ হিটলার কোনোভাবেই আত্মসমর্পণ করতে নারাজ ছিলেন। রাশিয়ার কাছে আত্মসমর্পণের চেয়ে মৃত্যু তাঁর কাছে শ্রেয় মনে হলো। তাই রাশিয়ার কাছে যখন তাঁর পরাজয় নিশ্চিত, তখন হিটলার ২৯ এপ্রিল, ১৯৪৫ সালে তাঁর গোপন চেম্বারে বসে তাঁর শেষ কিছু ইচ্ছের কথা লিখতে বসলেন। তাঁর জীবনের শেষ ২৪ ঘন্টার দুর্ধর্ষ সেই পরিকল্পনাটি ছিলো— ৩০ এপ্রিল রাত ৩ টা ৩০ মিনিটে হিটলার নিজে মাথায় পিস্তলের গুলি ছুড়ে আত্মহত্যা করবে। এর আগে আরো দুজনকে সে নিজের হাতে হত্যা করবে। একজন হলো– তাঁর খুব প্রিয় সন্তানতুল্য পোষা কুকুর ‘ব্লান্ডি’। আরেকজন হলো তাঁর প্রেমিকা (ইভা ব্রাউন), যার সাথে তাঁর দীর্ঘ ১৫ বছরের রিলেশন ছিলো। হিটলার জানতে চাইলেন– “ইভা কিভাবে মরতে চাও?”  ইভা জানালেন– সে সাইনাইড নামক একটি বিষাক্ত ক্যাপসুল খেয়ে মরতে চায়। গুলি বা অন্যকিছুর আঘাত পেয়ে রক্তাত্ব অবস্থায় সে মরতে চায় না। হিটলার নিজে মাথায় গুলি ছুড়ে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিলেন, এটা নাকি তাঁর কাছে কম কষ্টের মনে হয়েছিলো। আর তাঁর সন্তানতুল্য প্রিয় কুকুরটিকে সাইনাইড ক্যাপসুল খাইয়ে মারার পরিকল্পনা করলেন। 

কিন্তু কেন তিনি এই মৃত্যুর পরিকল্পনাগুলো করলেন? কারণ তখন রাশিয়ার কাছে হিটলার নিশ্চিত পরাজিত হতে যাচ্ছেন। পুরো পৃথিবী হিটলারের অতীতের নৃশংসতার জন্য তাঁর উপরে প্রচণ্ডভাবে ক্রুদ্ধ ও ক্ষিপ্ত। ইতোমধ্যে শত্রুরা তাঁর গোপন আস্তানা চিনে ফেলেছে। আর মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে তারা ধরা পড়তে যাচ্ছে। হিটলারের সবচেয়ে প্রিয় কাছের দুজন হলো– তাঁর পোষা কুকুর এবং প্রেমিকা ইভা ব্রাউন। নি:সন্দেহে হিটলারের উপরে তাদের যতো ক্ষোভ ছিলো, সব ক্ষোভ ও আক্রোশ তাঁর প্রিয় জিনিসগুলোর উপরেই পড়বে। হিটলারের মৃত্যুর পর যাতে তাঁর প্রিয় কুকুর ও প্রেমিকা ইভা শত্রুদের ভয়াবহ আক্রোশের শিকার না হয়, তাই হিটলার নিজেই তাদের মৃত্যুর ছক আঁকলেন। এটা ছাড়া আর কোনো অপশন ছিলোনা। তিনি তাঁর প্রেমিকার পূর্ণ সমর্থন নিয়েছিলেন।

পরিকল্পনা মোতাবেক ২৯ এপ্রিল সম্ভবত দুপুরের দিকে, ৩৩ বছরের ইভা ব্রাউনকে বিয়ে করলেন। হিটলার তাঁর বাড়িতে একজন অফিসারের সহায়তায় অত্যন্ত বিষাক্ত সাইনাইড ক্যাপসুল প্রিয় কুকুরটির মুখে দিলেন। ঐ সময়ে হিটলারের হাত কাঁপছিলো। তখন নাকি তাঁর ভীষণ কষ্ট হয়েছিল! এদিকে ইভা ব্রাউন তাঁর রুমে প্রিয় ব্লাক কালারের ড্রেস পড়ে সাজগোজে ব্যস্ত। এই রাতটা শেষ হওয়া মাত্রই আগামীকাল সূর্যটা তাদের আর দেখা হবেনা। ইভা বিউটিকুইনের মতো সেজে হাজির। তাদের খুব কাছের কয়েকজন অফিসার ও তারা দুজন, সবাই একসাথে খুব শান্তমনে ডিনার করলেন। এরপর আড্ডা দিলেন। হিটলার এবং তাঁর নব বিবাহিত স্ত্রী ইভা ব্রাউন তাদের রুমে চলে গেলেন। হিটলার নিজে দুটো সাইনাইড ক্যাপসুল ইভাকে দিলেন। ইভা খেয়ে সকাল হবার পূর্বেই মৃত্যু বরণ করলেন।

এদিকে হিটলার আত্মহত্যার পূর্বে অফিসারদের থেকে বিদায় নিলেন, তাদের কড়া নির্দেশ দিলে মৃত্যুর পর যেনো তাঁর মৃতদেহকে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলা হয়। শত্রুরা যেনো তাঁর কোনো চিহ্নই খুঁজে না পায়।  ৩০ এপ্রিল, ১৯৪৫, মধ্যরাতে হিটলার একদম নিশ্চুপ, নিরব হয়ে একা তাঁর রুমে চলে গেলেন। এতটা নিশ্চুপ এর আগে কখনো কেউ তাকে দেখেনি। ঠিক ৩ টা ৩০ মিনিটে তাঁর রুম থেকে প্রচণ্ড একটা গুলির আওয়াজ আসলো। তিনি আত্মহত্যা করলেন। 

438 দিন সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় বেঁচে থাকা
এয়ার ফোর্স ওয়ান’ আমেরিকার রাষ্ট্রপতির বিশেষ বিমান
নভোচারীরা স্পেস স্টেশনে কীভাবে ঘুমোন এবং কী খায়
কিভাবে একটি সাবমেরিন জলের নিচে থাকে

To read more : https://newsread24.com/

Related Images: