কলকাতার কাছে সেরা সপ্তাহান্তের গন্তব্যের তালিকায় মৌসুনি দ্বীপ একটি নতুন সংযোজন কিন্তু গত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মৌসুনি দ্বীপ পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ প্রান্তে, বকখালির কাছে অবস্থিত, এর তিন দিকে বঙ্গোপসাগর এবং একপাশে নদী। দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে আপনার গাড়ি পার্ক করতে হবে এবং নদী পার হতে হবে। দ্বীপে গাড়ির অনুমতি নেই। কলকাতা এবং মৌসুনি দ্বীপের মধ্যে দূরত্ব প্রায় 120 কিলোমিটার যা পৌঁছাতে প্রায় 3 ঘন্টা সময় লাগে। যানজট এবং রাস্তার অবস্থার উপর নির্ভর করে এটি 4 ঘন্টাও সময় নিতে পারে। কেউ বালুকাময় সমুদ্র সৈকত, সবুজ নারকেল গাছ এবং ঝোপঝাড় এবং আরামদায়ক দড়ির হ্যামকের উপর শুয়ে নির্মল জলের সাথে সংযুক্ত নীল আকাশ দেখতে পারে। ভোরের সুন্দর সূর্যোদয় এবং আকাশের কমলা-লাল রঙের সাথে সূর্যাস্ত মন্ত্রমুগ্ধ করে। এই দ্বীপের কাছাকাছি বালিয়াড়া বিচ। জন কোলাহলের বাইরে এখানে থাকবে ভিন্ন এক অনুভূতি । পশ্চিমবঙ্গের শেষতম বিন্দু জম্মুদ্বীপকে বালিয়াড়া থেকে দেখতে পাওয়া যায়। পাশে দেখা যাবে সাগর দ্বীপকে। স্থানীয় বাড়ির মহিলারা মাছ ধরতে আসে জাল নিয়ে। সমুদ্র ওদের খোরাক জোগায়। রুটি-রুজির খোঁজে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও লড়াই করে। সমুদ্রতট ধরে হাঁটাহাঁটি করে যতদূর ইচ্ছে চলে যেতে পারেন। চোখে পড়বে সমুদ্র তট জুড়ে লাল কাঁকড়ার ভিড়। ছুটোছুটির এক ভিন্ন খেলা দেখে আনন্দ পাবেন। নানা পাখির কলরব শোনা যাবে এখানে। এখান কার সমুদ্র তটে সন্ধ্যে নামার মুহূর্তটি বড় উপভোগ্য। জ্যোৎস্না রাতে চাঁদ উঠলে শোভা বাড়ে সমুদ্রের। চাঁদের প্রতিফলন পড়ে সমুদ্রের জলে।সমুদ্রে ঢেউয়ের গর্জনে আপনার রোজকার চেনা -জানা জগত হারিয়ে যাবে।
কোথায় থাকবেন: এখানে থাকার জায়গাটা বেশ মজাদার। এখানে যেহেতু হোটেল করার অনুমতি নেই তাই গ্রামের মানুষ ও কলকাতা বেসের সহযোগিতাই এখানে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু ক্যাম্প যেখানে মিলবে তাঁবু ও কটেজে থাকার অভিজ্ঞতা। এইসব কিছু দেখভালের দায়িত্বে থাকে গ্রামেরই লোকাল লোকজন আর এঁরা আপনাকে দেবেন একেবারে খাঁটি আথিতীয়তা। এর খরচও একেবারে সাধ্যের মধ্যেই। খরচ মাথাপিছু ১,০০০ টাকা থেকে ১,৫০০ টাকার মধ্যে।
কখন যাবেন: বর্ষাকাল ছাড়া বছরের যে কোনো সময় মৌসুনি দ্বীপ ঘুরে আসতে পারেন । যদি ঝড় সংক্রান্ত আপডেট থাকে তাহলে ভ্রমণের প্ল্যান পরিত্যাগ করুন। তাই দ্বীপ ভ্রমণের আগে আবহাওয়া সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জেনে নিয়ে যাওয়াই ভাল। এয়ার কন্ডিশনার-এর ব্যবস্থা না থাকার কারণে তীব্র গরমে ভ্রমণ করা তেমন সুখকর হবে না। তবে শীতকালীন সময়টা মৌসুনি দ্বীপ ভ্রমণের জন্য বেছে নিতে পারেন ।
কীভাবে যাবেন:
ট্রেনে: শিয়ালদহ স্টেশন থেকে লোকাল ট্রেন চেপে পৌঁছে যান নামখানা। স্টেশন থেকে হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদী নৌকার সাহায্যে কিংবা ম্যাজিক গাড়ি সহযোগে ব্রিজ পেড়িয়ে পৌঁছে যান বাগডাঙ্গা ফেরি ঘাট। নদী পেড়িয়ে টোটো ভাড়া করে পৌঁছে যান ক্যাম্পে।
সড়কপথে: গাড়ি করে নামখানা হয়ে পৌঁছে যান বাগডাঙ্গা ফেরি ঘাট। আপনার গাড়িটি একদিনের জন্য পার্কিং এ রেখে নদী পাড় হয়ে পৌঁছে যান গন্তব্যে।